আজ বৃহস্পতিবার, ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাস কেড়ে নিল সংসারের হাল ধরা কিশোরের প্রাণ


নিজস্ব প্রতিবেদক: : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বেপরোয়া গতির বাস কেড়ে নিল সংসারের হাল ধরা ১৬ বছর বয়সী ইকবাল নামে এক কিশোরের প্রাণ। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার গোলাকান্দাইল চৌরাস্তায় ট্রাফিক বক্সের সামনে ঘটে এই মর্মান্তিক দূর্ঘটনাটি। নিহত ইকবাল নরসিংদী জেলার মাধবদী উপজেলার আলগী এলাকার মৃত ইব্রাহীমের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের বরাদ দিয়ে জানা যায়, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় করে মাধবদী থেকে কাপড় নিয়ে গাউছিয়া কাপড়ের মার্কেটে আসার পথে গোলাকান্দাইল চৌরাস্তায় ট্রাফিক বক্সের সামনে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় কিশোর ইকবাল ছিটকে পড়ে গেলে বাসটি তাকে চাঁপা দিয়ে চলে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় পথচারীরা তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আরো জানা যায়, পুলিশ বাস না ধরার কারণে লাশের স্বজনরা লাশ নিয়ে চলে যেতে চাইলে পুলিশের বাঁধা। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিহত ইকবালের পিতা ইব্রাহীম হৃদ রোগে গত পাঁচ বছর আগে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে মারা যায়। সেই থেকে ইকবাল সংসারের হাল ধরতে মামার দোকানে চাকুরী করে। ইকবাল সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়ায় তার মা নাছিমা বেগম সুতার মিলে কাজ নেন। ইকবাল প্রতি মঙ্গলবার গাউছিয়া কাপড়ের হাটে কাপড় নিয়ে এসে মামার সাথে দোকানদারী করে। এছাড়া প্রতিদিন সেকেরচর, বাবুর হাট ও মাধবদীতে দোকানদারী করতেন। তার রোজগারের টাকা দিয়ে সংসারের খরচ, ছোট ভাই ইসহাকের লেখাপড়া চলতো। এখন আর সংসারের হাল ধরার মতো কেউ রইলো না। মাত্র ১০ বছর বয়স থেকেই সংসারের হাল ধরেছিল ইকবাল। কয়েক বছরের মধ্যে সংসারটি ঝরে গেলো দুটি মর্মান্তিক ঘটনায়। এক পথচারী রফিকুল মিয়া জানান, ট্রাফিক পুলিশের সামনেই এই দূর্ঘটনাটি ঘটেছে। ট্রাফিক পুলিশ ইচ্ছে করলে সেই বাসটি ধরতে পারতো, কিন্তু ধরে নাই। রফিকুল মিয়া আরো বলেন, এই বাস ফকির ফ্যাশন ও গ্রামট্রেক্স এর শ্রমিক আনা-নেওয়া করেন। শ্রমিক আনা-নেওয়ার বাসগুলো ফিটনেস বিহীন লক্কর-ঝক্কর। তবুও এসব বাস অনায়াসে রাস্তায় চলাচল করতে পারে। এযেনো দেখার কেউ নেই। এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের এস আই আলী আজম জানান, আমরা ফোনের মাধ্যমে জানতে পারি একটি অজ্ঞাত বাস এক অটোরিকশাকে চাঁপা দিয়ে চলে যায়। এতে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আমরা লাশটি কাঁচপুর হাইওয়ে থানা নিয়ে যাচ্ছি। আইনী প্রক্রিয়া পর তার স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেব। আর বেপরোয়া বাসটি শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ